সুন্নাত নামাযের কী ক্বসর আছে?



প্রশ্ন:-৪
আমি একজন ব্যবসায়ী এবং ব্যবসার কাজে দেশের বিভিন্ন স্থানে সফর করতে হয়। চার রাকাতবিশিষ্ট ফরয নামাযে আমি কসর করে থাকি। জানতে চাই, ফরয নামাযের আগের ও পরের সুন্নতের ক্ষেত্রে আমার কী করণীয়? এগুলো না পড়লে কি কোনো সমস্যা হবে?

উত্তর:-
সাধারণ অবস্থার তুলনায় সফর অবস্থায় সুন্নতের হুকুম কিছুটা শিথিল হয়ে যায়। সফরের সময় তাড়াহুড়ো, ব্যস্ততা বা ক্লান্তি থাকলে সুন্নত নামায না পড়ার অনুমতি আছে। বিশেষত, যদি সহযাত্রীদের অপেক্ষায় রাখতে হয়, তাহলে সুন্নত পড়া থেকে বিরত থাকাই উত্তম।

তবে মুসাফির যদি কোনো স্থানে অবস্থান করেন এবং সেখানে স্থির হয়ে থাকেন, আর তাঁর মধ্যে ক্লান্তি বা অন্য কোনো ওজর না থাকে, তাহলে সুন্নতে মুআক্কাদা পড়া উত্তম। এটি আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য একটি সুন্দর আমল।

তবে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত সর্বাবস্থায় যথাসম্ভব পড়া উচিত। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর বা অবস্থান, কোনো অবস্থাতেই এটি ছাড়তেন না। হাদীসে এসেছে:

আয়েশা রা. বলেন:
"
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থ, অসুস্থ, সফর কিংবা স্থায়ী অবস্থানকোনো অবস্থাতেই ফজরের আগের দুই রাকাত সুন্নত ছাড়তেন না।" (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৯৫০)

উল্লেখযোগ্য ফিকহি গ্রন্থসমূহ থেকে মতামত:

1.      আলমুহীতুল বুরহানী (২/৩৮৪):
"
সুন্নত নামাযের ক্ষেত্রে উলামায়ে কেরাম বলেছেনসফরের সময় তা না পড়ার সুযোগ থাকলেও স্থির অবস্থায় থাকলে পড়া উত্তম।"


2.    আত-তাজনিস ওয়াল মাযীদ (২/১৭০):
"
যদি নিরাপত্তা ও স্থিতি থাকে, তাহলে সুন্নত নামায পড়াই উত্তম।"

অন্য উৎস:

  • আলমাবসূত, সারাখসী (১/২৪৮)
  • খুলাসাতুল ফাতাওয়া (১/২০৪)
  • আলবাহরুর রায়েক (২/১৩০)
  • আদ্দুররুল মুখতার (২/১৩১)

উপসংহার

সফরের সময় বিশেষ পরিস্থিতিতে সুন্নত নামায পড়া থেকে বিরত থাকা অনুমোদিত। তবে মুসাফির যদি স্থির থাকেন এবং ওজর না থাকে, তাহলে সুন্নত পড়া উত্তম। ফজরের দুই রাকাত সুন্নত সর্বাবস্থায় পড়া উচিত, কারণ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো তা ছাড়তেন না।

 

 


Post a Comment (0)
Previous Post Next Post